নিউজ সোনারগাঁ২৪ডটকমঃ সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের মেঘনার শাখা নদী ও আষাঢ়িয়ার চর এলাকায় কৃষকের ফসলি ও সরকারী খাস জমিতে জোর পূর্বক বালু ভরাটের অভিযোগ উঠছে স্থানীয় একটি শিল্প-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জোর পূর্বক বালু ভরাটের প্রতিবাদে স্থানীয় কৃষকরা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছেন।
জানাগেছে, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়ারচর গ্রামের আষাঢ়িয়ারচর মৌজার প্রায় ৭শত বিঘা জমিতে গত কয়েকদিন যাবত তিন চারটি ড্রেজার বসিয়ে স্থানীয় জাতীয়পার্টির নেতা মোক্তার হোসেন, মনির হোসেন ও সারোয়ারসহ তাদের সহযোগীরা আল-মোস্তফা গ্রুপের পক্ষে মেঘনার শাখা আষাঢ়িয়া নদী, কৃষকের ফসলি জমি ও সরকারী খাস জমিতে বালু ভরাট করছে। স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকরা তাদের জমি ভরাটে বাঁধা দিতে গেলে আল- মোস্তফা গ্রুপের লোকজন তাদের মারধর ও মামলা হামলা হুমকি দিচ্ছে।
সরেজমিনে আষাঢ়িয়ারচর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্ব পাশ থেকে মেঘনা নদী পর্যন্ত কয়েকটি শক্তিশালী ড্রেজার বসিয়ে বালু ভরাট করছে। কৃষকের লাগানো ফসলের উপর ড্রেজার পাইপ দিয়ে ৮/১০ ফুট উচু করে বালু ফেলেছে। শুধু ফসলি জমিই নয় মেঘনা শাখা আষাঢ়িয়া নদীটিও ভরাট করে ফেলছে। ড্রেজারের পাশেই কোম্পানীর পক্ষে কয়েকজন সন্ত্রাসী পালাক্রমে দিনে রাতে পাহারা দিচ্ছে। রবিবার সকালে গণমাধ্যম কর্মীরা আষাঢ়িয়ারচর মৌজায় গেলে কোম্পানীর পক্ষে বালু সন্ত্রাসীরা দৌড়ে এসে গণমাধ্যম কর্মীদের ছবি তুলতে নিষেধ করেন। এসময় কৃষকরা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করলে বালু সন্ত্রাসীরা গণমাধ্যম কর্মীদের সামনেই তাদের মারতে তেড়ে যান।
আষাঢ়িয়ারচর গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। তারা জোর করে আমার ফসলের উপর বালু ভরাট করে ফেলেছে। আমি বাঁধা দিলে তারা মামলা হামলার হুমকি দেয়। এছাড়া স্থানীয় কৃষক নূর হোসেন, রুহুল আমিন, আলাউদ্দিন মুন্সি ও শরীফ হোসেন বলেন, তাদের জমি না কিনেই কোম্পানীর হয়ে স্থানীয় নেতারা জোর করে ভরাট করে ফেলছে। আষাঢ়িয়ার চর গ্রামের কামিনা বেগম, নূরুননেছা ও কামরুনেছা বলেন, আমাদের শেষ সম্ভল ভিটেমাটি জোর করে আল মোস্তফা কোম্পানীর লোকজন বালু ফেলে ভরাট করে ফেলছে। আমরা বালু ভরাটে বাধাঁ দিতে গেলে কোম্পানীর পক্ষ হয়ে লাঠিয়াল বাহিনী মারধর করতে আসে।
এ ব্যাপারে আল মোস্তফা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, আমি বালু ভরাটের কাজটি স্থানীয় নেতাদের দিয়েছি। তারা আমার কাছ থেকে বালু ভরাটের কন্ট্রাক নিয়ে বালু ভরাট করে দিবে। যদি কারো জমি না কিনে ভরাট করা হয়ে থাকে তাহলে আমার কাছে আসলে তাদের জমির ন্যায্যমুল্য দিয়ে কিনে নেয়া হবে।
বালু ভরাটের কাজে জড়িত স্থানীয় জাতীয় পার্টি নেতা মোক্তার হোসেন বলেন, কারো জমি জোর করে ভরাট করা হচ্ছে না। তারপরও কৃষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বর্তমানে আমি ভরাট কাজ বন্ধ রেখেছি। আল মোস্তফা গ্রুপের চেয়ারম্যান তার ক্রয়কৃত জমি কাগজে কলমে আমাকে বুঝিয়ে দিলে ভরাট কাজ পূনরায় শুরু করবো। জোড় করে কারো জমি ভরাট করবো না।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোহাম্মদ নাজমুল হুসাইন জানান, আমি বালু ভরাটের বিষয়ে অবগত নই। আল মোস্তফা গ্রুপ যদি জোর পূর্বক জমি ভরাট, সরকারী খাল ও খাস জমি দখল করে থাকে তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।